Saturday, March 8, 2025

চিহ্নিত মাদক কারবারি’ রেজাউল এখন শ্রমিক দলের সভাপতি

আরও পড়ুন

আওয়ামী শাসনামলে ‘চিহ্নিত মাদক কারবারি’ ছিলেন রেজাউল সরদার ওরফে রেজু। তিনি ও তার স্ত্রী রুনুর বিরুদ্ধে পটুয়াখালীর বাউফল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক কারবারে জড়িত এই দম্পতি একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেলও খেটেছেন। এই রেজাউল সরদার এখন তিনি ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি।

রেজাউল কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজান মোল্লার একান্ত সহচর হিসেবে পরিচিত। তিনি বর্তমানে ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি পরিচয়ে ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে প্রভাব বিস্তার করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রেজাউল সরদার ওরফে রেজু একজন পেশাদার মাদক কারবারি। কালাইয়া বন্দরের গোরস্থানের সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করেছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজান মোল্লা। সেই ঘরে মাদক ও জুয়ার আসর পরিচালনা করতেন রেজাউল করিম। ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রেজাউলের পরিচালিত ওই মাদকের আখড়ার ঘর গুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। এরপরে অনেক দিন তিনি পালিয়ে বেড়িয়েছেন। এখন তিনি কালাইয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের শ্রমিক দলের পরিচয় ব্যবহার করে ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়েছেন। বিএনপি দলীয় প্রভাব বিস্তার করে তিনি ফের মাদক কারবার শুরু করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  বিএনপিতে যোগ দিলেন জাতীয় পার্টির ২ শতাধিক নেতাকর্মী

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাউফলের অন্যতম সংগঠক ফাতিমা জামান সামিয়া বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী যুবলীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় রেজু এতদিন মাদক ব্যবসা করেছেন। এখন ব্যবসা চালিয়ে যেতে তিনি শ্রমিক দলের পদ ব্যবহার করছেন। হাসিনা সরকার পতনের পরেও রেজাউলের স্ত্রী রুনু বেগমকে মাদকসহ আটক করে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ বিষয়ে জানতে রেজাউল সরদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  মন খারাপ হলেই বিল্লাল দখলে নিতেন অন্যের সম্পদ

উপজেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ মঞ্জু বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি করেছে ইউনিয়ন শ্রমিক দল। তাই রেজাউল কীভাবে কমিটিতে পদ পেয়েছেন, আমি জানতাম না। তবে বিষয়টি জানার পর আমি সঙ্গে সঙ্গে ইউনিয়ন সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছি রেজাউলকে বহিষ্কারের জন্য।

কালাইয়া ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি বাসার শিকদার বলেন, উপজেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক নির্দেশনা দিলে আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তাকে বহিষ্কার করেছি। সে যে ব্যানার-ফেস্টুন টানাচ্ছেন বিষয়টা আমার জানা নেই। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মাণে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে

রেজাউল যুবলীগ সভাপতির একান্ত সহকারী হয়েও পদ কীভাবে পেলেন এবং অফিসিয়ালি তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, তখন ওয়ার্ড বিএনপির সবাই বলেছিলেন, তিনি বিএনপি করে, তাই তাকে সভাপতি পদ দেওয়া হয়েছিল। তবে তাকে অফিসিয়ালি প্যাডে বহিষ্কার করা না হলেও উপজেলা কমিটির সবার সিদ্ধান্তে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আমি তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছিলাম।

রেজাউল সরদার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিষয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে। মাদক কারবারি কোনো দলের সেটা পুলিশ কখনোই দেখে না।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ