Friday, March 14, 2025

গোপনে পুরো পরিবারের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা

আরও পড়ুন

পূর্বাচলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংরক্ষিত প্লট থেকে পুরো পরিবারের নামে মোট ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দ নিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহেনা ও তার দুই ছেলে মেয়েসহ মোট ৬ জনের নামে ১০ কাঠা করে এ প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। তখন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ছিলেন আনিসুর রহমান। পুরো প্রক্রিয়াটি করা হয় অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য পূর্বাচলে জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অতি গোপনীয় বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করে ২০২২ সালে প্লটগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি এতটাই গোপনীয়তার সঙ্গে করা হয় যে- রাজউকের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া অন্যরা এ নিয়ে কিছুই জানতেন না।

আরও পড়ুনঃ  শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৯১ জনের বিরুদ্ধে লালবাগে মামলা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একাধিক কর্মকর্তার জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শেখ হাসিনার নামে প্লটের বরাদ্দ পত্র ইস্যু করে রাজউক। পরে সেটি শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনের ঠিকানায় পাঠানো হয়। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য রাজউকের জমি বরাদ্দের বিষয়টি কয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউই জানতেন না।

প্লট বরাদ্দের ফাইল সূত্রে জানা গেছে, কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা হিসেবে ১০ কাঠা প্লটের মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরিফ। পূর্বাচলে প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে শেখ হাসিনার প্লট নম্বর ০০৯। এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের বরাদ্দ করা প্লট নম্বর ০১৫, সায়মা ওয়াজেদ পতুলের নামে বরাদ্দ করা প্লট নম্বর ০১৭। তাদের নামে যে বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়েছে সেখানে স্বাক্ষর আছে রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার সে সময়ের উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমানের। এছাড়া সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহেনার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলের প্লট নম্বর ০১১, তার মেয়ের নামে বরাদ্দ হওয়া প্লট নম্বর ০১৯।

আরও পড়ুনঃ  মেয়েকে হত্যার পর মা-বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের এক কর্মকর্তা বলেন, প্লট বরাদ্দের বিষয়টি খুব গোপনীয়তার সঙ্গে করা হয়। সেই সময় কয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ এটি জানতেন না। সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই সংক্রান্ত নথি গোপনে সরিয়ে ফেলা হয়। পরে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিষয়টি জানতে পেরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের বিক্ষোভের মুখে সেই ফাইলগুলো এখন আবার রেকর্ড রুমে রাখা হয়েছে।

রাজউকের সংরক্ষিত প্লট এ ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৮৫ জনকে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৪৯টি প্লটই পান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, উচ্চ পর্যায়ের আমলা, ছাত্রলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেতারা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ